বছর কয়েক আগে কেফায়েত ভাই প্রায়ই বলতেন, ‘তুই যদি তোর চিন্তা ও দর্শন মানুষের মাঝে ছড়ায়া দিতে চাস তাইলে কোনো মাদরাসায় ঢুইকা যা অথবা নিজে কোনো মাদরাসা বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা কর। তোর প্রতিষ্ঠান আর ছাত্ররা তোর চিম্তার লিগ্যাসি ছড়ায়া দিবে। প্রতিষ্ঠান ছাড়া এই দেশে কোনো চিন্তার বিপ্লব দীর্ঘস্থায়ী করা সম্ভব না!‘

কেফায়েত ভাইয়ের কথাগুলো আমি প্রায়ই মনে মনে ভাবি।

গতকাল রাতে আমি ও এহসান সিরাজ বরিশালের চরমোনাই এসেছি। রাতে শাইখে চরমোনাই মুফতী ফয়জুল করীমের (দা. বা.) সঙ্গে সাক্ষাত ও আলাপ আলোচনা হলো। শাইখের দিলখোলা আপ্যায়ন ভুলবার মতো নয়।

এখানে এসে Rezaul Karim Abrar ভাই ও Hasib R Rahman-এর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল! আতিথেয়তা দিয়ে ধন্য করেছেন Shamsud Doha Talukder ভাই এবং H M Abu Bakar ভাই। রাতটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

সকালে চরমোনাই মাদরাসা ও আশপাশে মাহফিলের ময়দানগুলো ঘুরে দেখলাম। পাশ দিয়ে বয়ে চলা প্রমত্তা কীর্তনখোলা নদীর পাশে যখন দাঁড়ালাম, কেফায়েত ভাইয়ের কথাগুলো তখন আবার মনে হলো। এই যে চরমোনাইয়ের নিজস্ব তরিকা ও দর্শন এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, পীরগণ গত হয়ে গেলেও তাদের চিন্তা-দর্শন রয়ে যাবে যুগ যুগ ধরে। যদি প্রতিষ্ঠানও এখানে না থাকে, তবু দেশব্যাপী ছড়িয়ে থাকা এই তরিকার লাখ লাখ ছাত্র, শিষ্য, মুরিদ, কর্মী তাদের চিন্তার লিগ্যাসি লালন করবেন শতাব্দী ধরে।

এজন্য চিন্তা ও তরিকার নিজস্বতা যেমন জরুরি, তেমনি চিন্তা পরিপুষ্ট ও সংরক্ষণের জন্য নিজস্ব প্রতিষ্ঠানও জরুরি। আরও জরুরি হলো, নিজস্ব চিন্তা-দর্শনকে সুচারুরূপে লিপিবদ্ধ করে প্রকাশ ও স্থায়ী নানামাত্রিক রূপ দেয়া।

দরবেশ আন্দোলনকে বেগবান করতে একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা খুব জরুরি!