এর আগে `হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল’ নামে এই তরিকার একটি পুস্তক লিখেছি। কিশোর-তরুণদের জন্য লেখা। বক্ষ্যমান পুস্তকটিও একই তবকার। নিজের ব্যক্তিগত চিন্তা-ভাবনা, দুর্ভাবনা, দুশ্চিন্তা, অব্যক্ত কথা―যেগুলো জনসম্মুখে বলি না, সেসব অকপটে বলা হয়েছে। অতি আশাবাদের কথা হলো, অদূর ভবিষ্যতে এই তবকার আরও পুস্তকাদি প্রকাশ হবে এবং সেগুলোতে স্পর্ধিত কথাবার্তার শোরগোল থাকবে আরও অধিক।

লেখালেখি আমার কাছে অত বেশি সিরিয়াস বিষয় না। মানুষের জীবন অনেক বেশি বিস্তৃত, বিশাল তার ব্যাপ্তি। সেই বিশালতার কাছে শিল্প-সাহিত্য, সুকুমারবৃত্তি, আর্ট-কালচার চর্চা অনেক সময় জগদ্দল হয়ে পড়ে থাকে। তার কোনো মূল্যমান থাকে না। তবু জীবন বিউটিফুল। সেই জীবনকে পুণ্য করে তোলো। লেখা বা লেখক নিয়ে ভাবাভাবির কিছু নেই।
এ পুস্তক কাউকে কোনো পথ দেখাবে না, বিপথগামীও করবে না। এ পুস্তক সাধারণ কিছু পার্থিব অক্ষরের মধ্য দিয়ে অপার্থিব-অলৌকিক এক জীবনের কথা বলেছে। এজন্য এ পুস্তককে মসিহা মনে করারও কোনো কারণ নেই। এ পুস্তক সাধারণ্যের মাঝে থেকেও এক অনন্ত পুণ্যময় জীবনের কথা বলেছে মাত্র। এ ভিন্ন আর কি-ই বা করার ছিল!
পুস্তকের জন্য শুভাশীষ!
————-
‘এ জীবন পুণ্য করো’ পুস্তকের ভূমিকা এটি। পুস্তকটি দু-এক দিনের মধ্যে প্রকাশ হয়ে বাজারে আসবে। আমি ভেতরে এক প্রকার উত্তেজনা অনুভব করছি। সব পুস্তকের ব্যাপারে এমন উত্তেজনা অনুভূত হয় না, এ পুস্তকের জন্য হচ্ছে। এর কারণ আছে।
কিছু কথা এমন থাকে যেগুলো আপনি নিজের মুখোশের আড়ালে চাপা দিয়ে রাখেন, রাখতে হয়। অদ্ভুতুড়ে সমাজে আমাদের যাপন করতে হয় জীবন। সেখানে আপনাকে নানা রং ও আকারের মুখোশ পরে থাকতে হয়। আমাকে যেমন পরে থাকতে হয় ‘লেখকের’ মুখোশ।
‘আচ্ছা, আপনি লেখক, তাহলে এটা কীভাবে বলতে পারলেন? আপনি বই লেখেন কত কত, কিন্তু আপনার ক্যারেক্টার এমন কেন? ধ্যাত, আপনাকে ভেবেছিলাম কত বড় বুজুর্গ, আসলে তো আপনে একটা ছাগল টাইপের লোক!…
সুতরাং ভালোমানুষির একটা হাবাগোবা মুখোশ না পরলেই নয়।

এইসবের আড়ালে কিছু স্পর্ধিত কথা থাকে যেগুলো বলতে আঁকুপাকু করে মন। সেসবের অল্পবিস্তর কথা এ পুস্তকে বলা হয়েছে। সামান্যই বলা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও কঠিন করে বলার মশকো করছি এ দিয়ে।