বাহাত্তর বছরের বৃদ্ধ আলী মাকরামের প্রতি বিকেলের নির্ধারিত কাজ একটিই। বাড়ির ছাদে ওঠে দূরে আল কুদসের সোনালি গম্বুজের দিকে তাকিয়ে থাকা। কী শীত-গ্রীষ্ম, কী ঝড়-বাদল; বিকেল হলে আলী মাকরাম ঠিক চলে আসেন তার বহু বছরের পরিচিত ছাদে। ইসরাইলের সীমান্ত প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে দুর্বিনীত দৃষ্টি চলে যায় বায়তুল মাকদাসের শ্বেত পাথরের আঙ্গিনায়।

বিকেলের ফ্যাকাসে হলদে রোদ্দুর যখন মসজিদে আকসার স্বর্ণাভ গম্বুজের শীর্ষ চূড়ায় লেপ্টে থাকে, তখন মনে হয় সোনার দীপ্তির ঝিলিকে আলোকিত হয়ে ওঠে মসজিদে আকসার চারপাশ। যেন কী এক গোপন কথা বলবার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে বিষণ্ন বিকেলের হাওয়া। কী এক অসহ্য অব্যক্ততায় ঝিম ধরে থাকে চারপাশের বৈরী পরিবেশ। থরে থরে সাজানো সোনার গম্বুজের ভেতর থেকে প্রতিধ্বনি শোনা যায় চাপা গোঙ্গানির। দাবানলের মত সে গোঙ্গানির শব্দ ছড়িয়ে যায় দিগ-দিগন্তে। ইথারে, মহাকাশে, শূন্য থেকে মহাশূন্যে।

আর ঠিক তখনই বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠে আলী মাকরামের। হৃৎপিণ্ডের ভেতর আক্রোশে পাক খেতে থাকে উষ্ণ-তরল রক্ত। ব্যথায় কুঁকড়ে যায় মুখের বলি রেখা।

বুকের ভেতর ব্যথা নিয়ে আলী মাকরাম তবু দাঁড়িয়ে থাকে। এই ব্যথাকে সে ভালবাসে। বড় যত্ন করে পুষে রেখেছে বুকের মধ্যে। আল আকসার জন্য তার বুকে যে পুরনো ক্ষত, সে প্রতিদিন সেই ক্ষতে আঘাত করে রক্তক্ষরণ করতে ভালবাসে। এই ভালবাসা মুক্তির প্রতীক্ষার। এই ভালবাসা ইহুদীদের কবল থেকে আল কুদসকে স্বাধীন করার অদম্য বাসনার। এই ভালবাসা বছরের পর বছর ধরে বয়ে যাওয়া রক্ত স্রোতের দেনা শোধ করার কঠিন প্রতিজ্ঞার। আলী মাকরাম জানে রক্তের দেনা শুধু রক্তেই শোধ হয়।

এ কেবল ফিলিস্তীনের একজন আলী মাকরামের হৃদয়ের গুপ্ত দহন। এমন লাখ লাখ আলী আকরাম প্রতিদিন নিভৃতে স্বপ্ন পুষে স্বাধীনতার। ইসরাইলের হিংস্র দলন থেকে ফিলিস্তীনের পুণ্যভূমিকে মুক্ত করার দৃঢ় প্রত্যয়ে আবিষ্ট থাকে। এটা তাদের কাছে এক আমরণ সংগ্রাম।

আজ থেকে ষাট বছর আগে শুরু হয়েছিলো ইসরাইলের দখলদারিত্ব। তারপর থেকে ইসরাইলের সাথে আরবদের অনেক লড়াই হয়েছে। কিন্তু কোন সুফল হয়নি। বরং আমেরিকা ইউরোপের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে ইহুদীদের সারম্বড়তা দিন দিন বাড়তে থাকে। দিনে দিনে দখল করে নেয় নাবলুস, হাইফা, বেথেলহেম এমনকি মুসলমানদের প্রথম ক্বিবলা বায়তুল মুকাদ্দাসও। অনেক আলোচনা, সম্মেলন, যুদ্ধবিরতির মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হয়েছে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। নিত্য কেবল বেড়েই চলেছে লাশের বহর। শোকের মিছিল।

কেমন আছে ইতিহাসের পুণ্যভূমি ফিলিস্তীন? কীভাবে দিন কাটে পুণ্যভূমির আজকের সন্তানদের? হাজার হাজার মাইল দূর থেকে আমাদের হৃদয়ে যখন এই হাহাকার বাজে। তখন আমরা নিজেদের অসহায়ত্বকে বিদ্রুপ করা ছাড়া কোনো সান্ত্বনাই দিতে পারি না। প্রতিদিন আমরা হামাস, হিযবুল্লাহ, ফাতাহর বিজয় প্যারেডের খবর শোনার জন্য বেচাইন হয়ে থাকি। কিন্তু বিবিসি, রয়টার্স, এপি, এএফপির ডেস্কের ভেতর দিয়ে আসতে আসতে ফিলিস্তীনের সংবাদ আর সংবাদ থাকে না, তা হয়ে যায় দুঃসংবাদ। এভাবে প্রতিনিয়ত আমরা পশ্চিমা মিডিয়ার ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি।

আমরা জানতে পারি না কতজন কিশোর নতুন করে শাহাদাতের তামান্নায় নাম লিখলো ইন্তিফাদার রক্তিম ইশতিহারে। অথচ আমরা প্রচার মাধ্যমে ছবি দেখি এক শহীদের শোকযাত্রার। আমাদেরকে ঢিভি, পত্রিকায় দেখানো হয় ইসরাইলের বোমা বর্ষণে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া ফিলিস্তিনিদের দালান কোঠার। অথচ মন বলে প্রতিটি ধ্বংসস্তুপের ঘাঁটিতে ওঁত পেতে আছে হামাসের মুখোশপরা সাহসী যোদ্ধারা। মন বলে প্রতিটি শাহাদাতের পরে ফিলিস্তিনের পবিত্র মাটি স্বাধীন করার জীবনপণ যুদ্ধে জীবন বাজি রাখে নতুন আরো এক হাজার মুক্তি পিয়াসী। কিন্তু সে খবর আমাদের কাছে আসে না। আমাদের কাছে খবর আসে না সেই সব সাহসী কিশোরের, যারা গুলতি আর নুড়ি পাথর নিয়ে বীর বিক্রমে লড়ে যায় ইসরাইলী ট্যাংক আর বুলডোজারের সামনে। খবর পাই না এইসব কিশোরের ভালবাসা কী, এই কিশোরদের স্বপ্ন ও সাহসের উৎসমুখ কোথায়। জানতে পারি না, কেন ওরা ছোট্ট বয়সেই আমেরিকার কালো তালিকাভুক্ত।

কিসের আশায়, কিসের দুরন্ত নেশায় ওরা ওভাবে মৃত্যুকে দুপায়ে ঠেলে দেয়? প্রতিদিন ওরা স্বজন, সুহৃদ বা কোনো পরিচিতজনের লাশ নিয়ে শোক মিছিল করে। তবু সুনিশ্চিত মৃত্যুকে ভয় পায় না। আবার হাত তুলে নেয় গুলতি আর নুড়ি পাথর। নেমে পড়ে প্রতিরোধে, প্রতিশোধে।

হ্যাঁ প্রতিশোধ। ওরা এখন প্রতিশোধের সেনানী। একজনের বাবাকে ঈদের আগের রাতে ধরে নিয়ে গেছে মোসাদ। আট বছর হয়ে গেলো আজো ফেরেনি সে। তাই পুত্র হিসেবে হারানো পিতার জন্য সে প্রতিশোধ নেবে। প্রতিশোধ নেবে ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে শহীদ হয়েছে যে ছেলেটির মা – প্রতিশোধ নিতে সেও আজ পথে। কেউ হারিয়েছে সর্বস্ব, নতুন করে হারাবার আর কিছুই নেই তার। তাই এবার প্রতিশোধ নেবার পালা। প্রতিশোধই তার বিজয়।

এভাবেই বেড়ে উঠেছে ফিলিস্তীনের কচি, তাজা কিশোর তরুণরা। সারাক্ষণ বারুদের গন্ধ। বোমা-গুলির আওয়াজের সঙ্গে বসবাস। দিন কেটে যায় কোনো রকম। কিন্তু রাত হলেই কিশোর-তরুণদের মায়েরা নিজের সন্তানকে আগলে রাখে বুকের কাছে। কখন যেন ছোবল মারে ইসরাইলী হায়েনা। নিদারুণ উৎকণ্ঠায় কাটে প্রতিটি মুহূর্ত। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছে বুটের লাথি, প্রিয়জনের মৃত্যু, রক্ত, ধ্বংসস্তুপ। আর বুঝতে শিখেছে স্বাধীনতার তীব্র আকুতি। তাই মৃত্যু দিয়ে উপার্জিত হয় চিরকাম্য স্বাধীনতা।

অনেক ফিলিস্তিনি নিজের সন্তানদের কথা ভেবে হিজরত করেছেন পার্শ্ববর্তী কোনো দেশে বা ইউরোপ-আমেরিকায়। কেননা তারা বুঝে নিয়েছে শুধু অস্ত্র দিয়ে বর্তমান যুদ্ধে স্বাধীনতা অর্জন দুঃসাধ্য প্রায়। প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হবে প্রযুক্তির উৎকর্ষতার বিজ্ঞানে। তবু লাঞ্চনা তাদের পিছু ছাড়েনি। পশ্চিমা দেশের কেউ যখনই শুনে সে একজন ফিলিস্তিনি – তখন সে তাদের দিকে তাকায় ঘৃণার দৃষ্টিতে। কারণ সে একজন স্বাধীনতাকামী দেশের ছেলে। সে মুসলমান। সুতরাং সে সন্ত্রাসী।

পশ্চিমারা কখনো ভেবে দেখে না কেন একজন কোমলমতি শিশু কৈশোর, যৌবনে হাতে তুলে নেয় অস্ত্র! এই অস্ত্র তুলতে তাকে বাধ্য করেছে কে? কে তাকে শিখিয়েছে বন্দুকের ভেতর গুলি থাকে? সেই গুলিতে মানুষ মারা হয়। সে তো কখনো স্কুলের আঙ্গিনা ছেড়ে গোপন ঘাঁটিতে আশ্রয় নিতে চায়নি। বই খাতা রেখে সশস্ত্র লড়াইয়ের খাতায় নাম লেখাতে চায়নি। মায়ের বুকের উষ্ণ আদর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে চায়নি। কিন্তু যখন সে দেখলো বোমায় বিধ্বস্ত হয়ে গেছে তার প্রিয় স্কুল-আঙ্গিনা। পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বইয়ের পাতা। মায়ের উষ্ণবুক ঝাঁঝরা হয়ে গেছে বুলেটে। তখন কী করতে পারে একটি তাজা তরুণ? সে কি এর বিচার চাইতে নিউইয়র্কের জাতিসংঘের সদর দফতরে যাবে? আধুনিক মানবতাবাদী মানুষেরা হয়তো তাই বলবেন।

কিন্তু কোথায় মানবাধিকার, কোথায় সভ্যতা? ১৯৪৮ সালে যে জাতিসংঘ কোনো আইন, রীতিনীতি না মেনে ইসরাইল নামক জারজ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছিলো তাদের কি সভ্য বলা যায়? যে আমেরিকা ফিলিস্তিনিদের হত্যার জন্য ইসরাইলকে প্রতিবছর অস্ত্র উপহার দেয় তা কি মানবতাবাদ? আর ইসরাইল! যারা ফিলিস্তিনের বিভিন্ন শহরের পানি, গ্যাস, খাবার বন্ধ করে দিয়ে ক্ষুধায় মারতে চায়; যে ইহুদীরা হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে বিনা দোষে অমানবিক নির্যাতন করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে তারাই কি মানবাধিকারের গান গায়? সত্যিই সেলুকাস!

কয়েকদিন পরপর পশ্চিমা নেতৃবৃন্দ ফিলিস্তিনের শান্তির জন্য নানা ধরনের বৈঠকে বসে। কিন্তু তা শুধুই লোক দেখানো। হামাস যখন নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে, পশ্চিমা বিশ্ব তখন তাদের দমিয়ে রাখতে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বন্ধ করে দেওয়া হয় হামাসের ব্যাংক একাউন্ট। কূটচালের মাধ্যমে বিরোধ লাগিয়ে দেয়া হয় হামাস-ফাতাহর মধ্যে। ফলে হামাসের বিজয় নিষ্ফল হবার উপক্রম হয়। বর্তমানেও সে বিরোধের জের চলছে।

সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিশ্বের মানুষের কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত দেশ হচ্ছে ইসরাইল। কারণ তারা যুদ্ধবাজ এবং দখলদার। পৃথিবীর সব শান্তিকামী মানুষ ভাল করেই জানে কারা যুদ্ধ ও দাঙ্গা করতে ভালবাসে। আর কারা শান্তিতে মাতৃভূমির মাটিতে বসে দুবেলা দুমুঠো ভাত খেতে চায়।

কিন্তু নিদারুণ যন্ত্রণার বিষয়, সারা বিশ্বের দেড়শো কোটি মুসলমান মিলেও আমরা ফিলিস্তিনের সেই ন্যায্য অধিকারটুকু আদায় করতে পারিনি। ওআইসি, আরবলীগসহ মুসলিম দেশের সংগঠনগুলো শুধু হা-হুতাশ করেই দায়িত্ব শেষ করে ফেলে। তারা হৃদয়ের উত্তাপ দিয়ে বুঝতে চায় না ফিলিস্তিনিদের গভীর যাতনার কেন্দ্রবিন্দু কোথায়। কেন তারা হাতিয়ারকে করে নিয়েছে জয়ের সম্বল। কেন তারা স্বাধীনতার বাসনায় বেছে নিয়েছে সংঘাত। এর উত্তর সবার জানা কিন্তু সে উত্তর মেনে নেবার সৎ সাহস নেই অনেকের।

আর কতদিন চলবে এই মৃত্যু উল্লাসে কম্পমান যুদ্ধের ডামাডোল? আর কতদিন পরাধীনতার কঠিন জিঞ্জির গলায় ঝুলিয়ে ওরা কেঁদে কেঁদে মরবে তোমাদের দুয়ারে? আর কতদিন? জীবনে তুমি অনেক প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়েছো, কিন্তু এই প্রশ্নের উত্তর দিতে তোমার মাথা হেঁট হয়ে যায়। কারণ তুমি অতীত ভুলে বসে আছো। যারা অতীত ভুলে ভবিষ্যতের উজ্জ্বলতা দেখতে চায় তাদের সে আশা মরীচিকা। এর উত্তর ইতিহাস জানে। ইতিহাস থেকেই খুঁজে নিতে হবে সফলতার উত্তর। সালাহউদ্দীন আইয়ুবীর বিজয় গাথা থেকে তুলে আনতে হবে বিজয়ের রসদ। ক্রুসেডারদের চরম পরিণতি দেখে ঠিক করে নিতে হবে হাতিয়ারের নিশানা। তবেই গুলতি আর নুড়ি পাথর হয়ে যাবে আবাবিল পাখির অব্যর্থ সেই মারণাস্ত্র।

অস্ত্র, বারূদ, ধ্বংস কোনো মহৎ কাজের শেষ কথা হতে পারে না। যুদ্ধ, মৃত্যু, সন্ত্রাস কোনো বিজয়কে গৌরবান্বিত করে না। যে শিশুটি ভূমিষ্ঠ হলো আজ, সেও মুুষ্টিবদ্ধ হাত উচিয়ে শান্তির স্লোগান দিতে উম্মুখ। সে তার পৃথিবীতে আগমনের মধ্য দিয়ে ঘোষণা দিয়েছে ‘যুদ্ধ নয় শান্তি চাই’। প্রতিটি শিশুই শান্তির দূত। অথচ মানুষরূপী একদল হায়েনা, পিশাচ সেই সব কোমল শিশুদেরকে আঘাত করছে প্রতিনিয়ত। ফুল হয়ে সুবাস বিলাবার পূর্বেই তারা ঝরে যাচ্ছে নিরবে নিভৃতে। এই সব শিশুরা তো অস্ত্র, যুদ্ধ, সন্ত্রাস নিয়ে জন্মায়নি।

তারপরও কেন তারা শিকার হয় হায়েনার নখর থাবার? পৃথিবীটাকে ভালমতো বুঝে উঠবার আগেই কেন তাদের হাতে উঠে আসছে অস্ত্র? কোনো মা-ই চায় না তার ছেলে যুদ্ধের অগ্নিঝরা পথে হেঁটে বেড়াক। কোন পিতাই চায় না তার ছেলে সারাক্ষণ মৃত্যু পরোয়ানা গলায় ঝুলিয়ে বেঁচে থাকুক। একে তো বেঁচে থাকা বলে না। এতো মৃত্যুর সঙ্গে সন্ধি করার নামান্তর। মৃত্যুর সঙ্গেই বসবাস।

আমরাও চাই ফিলিস্তিনের প্রতিটি শিশু, কিশোরের হাতে অস্ত্র নয় তাদের হাত ভরে যাক ফুলে ফুলে। শোক মিছিল নয় দৃঢ় পায়ে তারা এগিয়ে যাক শান্তির মিছিলের দিকে। শুধু ফিলিস্তিনের নয়। ইরাক, আফগানিস্তান, চেচনিয়া, কাশ্মীর, শ্রীলংকা, আফ্রিকাসহ যেখানেই শিশুরা হয়ে উঠছে যুদ্ধের নিশানা সেখানেই নেমে আসুক শান্তির শ্বেত কপোত। নিপাত যাক যত অশুভ ঘাতক। ধ্বংস হোক শান্তির দূত শিশুদের যারা আঘাত করে তারা। জয় হোক শান্তির।