ধরেন—
দুপুর থেকে রাগ করে আছেন। মনটা তাতিয়ে আছে— আজকে দফারফা হবে একটা। মনে মনে নানা টাইপের রাগালো কথাবার্তা সাজাচ্ছেন। সেসব মনে এলেই রাস্তার ভীড়ের মধ্যেও আপনার চেহারা গম্ভীর হয়ে উঠছে। নাকের বাঁশি তিরতির করে কেঁপে উঠছে— বাসায় গিয়ে নিই একবার!

বেশ ভালোকথা!
সন্ধ্যার পর আপনি বাসায় এলেন। যার ওপর রাগ, উনি সে মুহূর্তে বাসায় নেই। কোনো সমস্যা নেই, তাতে আপনার আরও সুবিধে হলো— রাগের টেম্পারেচার কয়েক ডিগ্রি আরও তাতানো গেলো। আপনি পাক সাফ হয়ে নিলেন। ঘরের অন্য আর সবার সঙ্গেও খুব একটা বাতচিতে যাচ্ছেন না। তাতে রাগের স্কেল নেমে যেতে পারে। অসুবিধা নেই, কিপ ইট আপ। রাগটা যুৎমতো ধরে রাখুন। ‘বিনা যুদ্ধে দেবো নাকো সূচাগ্র মেদিনী’ টাইপের কিছু ডায়ালগও আওড়ে নিতে পারেন এই ফাঁকে। যেহেতু রাগের মানুষটা এ মুহূর্তে বাসায় নেই।

আপনার উচিত নামাজটাও পড়ে ফেলা। কেননা লঙ্কাকাণ্ড হওয়ার পর নামাজের একাগ্রতা নাও থাকতে পারে।

আপনি নামাজে দাঁড়ালেন। ঠিক এমন সময় উনি এলেন। সিঁড়ির গোড়ায় আপনার জুতা দেখেই বুঝে ফেলেছেন— ইউ তাশরিফড্ ইন দ্য হাউজ!

উনি পা টিপে টিপে আপনার রুমে এলেন। আপনাকে নামাজে দেখে তিনি আপনার পাশে এসে দাঁড়ালেন। নিজের মুখ নিচু করে আপনার দিকে তাকিয়ে হাসি হাসি গলায় বড় মধুর সুরে বললেন— ‘আপনি কি আমার ওপর রাগ করছেন?’

ঠিক তখন আপনার কী করবার থাকতে পারে?

আপনার কি তখন ইচ্ছা হবে না— এত্তো কষ্ট করে দীর্ঘ সময় ধরে পোষা রাগটাকে মুহূর্তে তছনছ করার অপরাধে, এই মাইয়াডারে মাইরা শহিদের খাতায় নাম লেখাইতে?