ফকির আন্দোলনের প্রেক্ষাপট
কুখ্যাত গাদ্দার মীর জাফর, ঊর্মিচাঁদ, রাজবল্লভ, জগৎ শেঠ, ইয়ার লতিফ খান আর ঘসেটি বেগমদের প্রাসাদ-ষড়যন্ত্রে পলাশীর আম্রকাননে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে এ জনপদে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শোষণের রাজত্ব কায়েম হয়। শুরু হয় মুসলিমদের চরম দুর্দিন। অত্যাচারের স্ট্রিম রোলার নেমে আসে তাদের ওপর।

বাংলার স্বাভাবিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে ফেলার জন্যে ইংরেজ বেনিয়া গোষ্ঠী তাদের স্বার্থের অর্থনীতি ও উৎপাদন ব্যবস্থা চালু করে। তাদের প্রশাসনিক খড়গের তলায় বাধ্য হয়ে এক পর্যায়ে এদেশের কৃষকেরা ধান, পাট ও সব্জির পরিবর্তে নীল চাষ করতে বাধ্য হয়। কোনো কৃষক নীল চাষ করতে অবাধ্য হলে তার স্ত্রী-কন্যাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় নীলকুঠিতে। অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয় তাদের ওপর। এছাড়া ধর্মীয়ভাবেও মুসলমানদের নানা রকম গঞ্ছনার শিকার হতে হতো। ইসলামি চেতনার সূতিকাগার মসজিদ-মাদরাসার ওপরও নেমে আসে অযাচিত হস্তক্ষেপ। বাজেয়াপ্ত হয় দীনি প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দকৃত জমি-জিরাত, অর্থ-সম্পদ। এই অবস্থায় মুখ বুজে বসে থাকার সময় ছিল না মুসলমানদের। প্রয়োজন পড়েছিল এসব অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার। এদেশের হাজারো মজলুম মুসলিম পথ চেয়ে অপেক্ষার প্রহর গুণছিল হকের পতাকাবাহী একদল সত্যসেনানীর এগিয়ে আসার।

শক্তিশালী শত্রু সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজ বেনিয়া গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ১৭৬১ ঈসায়িতে সর্বপ্রথম যে সাধকপুরুষ অকুতোভয় বিপ্লবী সেনানী বিদ্রোহের দাবানল জ্বেলেছিলেন তিনি হলেন, ফকির নেতা মজনু শাহ বুরহানা রহমাতুল্লাহি আলায়হি।পরবর্তীকালে মাওলানা নিসার আলি ওরফে তিতুমীরের ১৮২৫ সালে বারাসাত বিদ্রোহ ও ১৮৩১ সালে নারিকেলবাড়িয়ার বাঁশের কেল্লার প্রতিরোধ সংগ্রাম, হাজী শরীয়তুল্লাহ ও তাঁর পুত্র মাওলানা নেসার উদ্দিন দুদু মিয়ার ফরায়েজি আন্দোলন। এভাবেই ধাপে ধাপে এগিয়ে যায় বাংলার মুসলিম জনতার স্বাধীনতা আন্দোলন।

প্রাথমিক জীবন ও কর্মক্ষেত্র
ফকির মজনু শাহ রহমাতুল্লাহি আলায়হির জন্ম-তারিখ সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু জানা যায় না। তিনি মিরাটের অধিবাসী ছিলেন। তাঁর জন্ম দিল্লির আশেপাশেই কোথাও বলে ঐতিহাসিকদের মতামত। তবে আমৃত্যু তিনি অবস্থান করেছিলেন বাংলায়। তাঁর বংশ-পরিচয় প্রায় অজ্ঞাত। তবে তিনি ফকির মজনু শাহ নামেই সমাধিক পরিচিত ছিলেন এবং এখনও আছেন।

বাংলায় মজনু শাহ সাধারণত দিনাজপুর জেলার বালিয়াকান্দিতে বসবাস করতেন। বগুড়ার মহাস্থান ফকির নেতা মজনুশাহের আস্তানা বা প্রধান ঘাঁটি ছিল। ১৭৭৬ ঈসায়িতে এখানে তিনি একটি দূর্গও নির্মাণ করেন। মূলত এখান থেকেই তিনি পুরো উত্তরবঙ্গে স্বাধীনতা আন্দোলন পরিচালনা করেন।

মজনু শাহর আধ্যাত্মিক জীবন : একটি পর্যালোচনা
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ন্যায়, সত্য ও ইসলামকে সমুন্নত এবং মিথ্যা-জুলুম ও অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিটি তীব্র ও সফল আন্দোলনের পেছনে রয়েছে আধ্যাত্মিক শক্তির বিশেষ উপস্থিতি। কারণ, একটি আন্দোলন পরিচালনা করতে যে পরিমাণ কঠোর পরিশ্রম ও আত্মত্যাগের প্রয়োজন হয় তার জন্যে মানুষের স্বাভাবিক শক্তির চেয়েও কয়েক গুণ বেশি শক্তির প্রয়োজন। সে হিসেবে ইংরেজদের অন্যায় অত্যাচার, জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাংলায় সর্বপ্রথম এবং সফল আন্দোলনের মহানায়ক ফকিরনেতা মজনু শাহ বুরহানাও নিঃসন্দেহে একজন সুফি সাধক ছিলেন।

এক পত্রে মজনু শাহকে ‘বুরহানা ফকির’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। ১৭৭১ ঈসায়ির ১ মার্চের আরেক পত্রে ইংরেজ কর্মচারী তাকে ‘শায়খ মজনু’ নামে উল্লেখ করেছেন।

বাংলাদেশের ইসলামি আন্দোলনের পথিকৃৎ অলিকুল শিরোমণি হজরত শাহজালাল ইয়ামেনি রহমাতুল্লাহি আলায়হির ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম বুরহানুদ্দীন বুরহান বগুড়াকে কেন্দ্র করে ইসলাম প্রচার করেন। তাঁরই অনুসৃত তরিকা উত্তরকালে বুরহানা তরিকা বলে প্রসিদ্ধ হয়। বাংলার বুরহানি বা বুরহানা ফকিরগণ এ তরিকারই অনুসারী। এ হিসেবে বুরহানা ফকিরগণ মূলত শাহজালাল রহমাতুল্লাহি আলায়হির জালালিয়া তরিকার অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তার কারণ, বুরহানি বা বুরহানা তরিকা জালালিয়া তরিকার শাখা-বিশেষ, আর জালালিয়া তরিকা ‘সুহরাওয়ার্দি’ তরিকার অংশ-বিশেষ। তাই ফকির মজনুর নামের সঙ্গে ‘শাহ’ শব্দটি শাহজালালের প্রতি ইঙ্গিত এবং ‘বুরহানা’ শব্দটি শায়খ বুরহানুদ্দীনের প্রতি বোঝায়।

ফকির আন্দোলন ও মজনু শাহ
আরবিতে ‘ফকির’ শব্দের আভিধানিক অর্থ অধম, গরিব, পার্থিব সম্পদহীন ব্যক্তি। যেহেতু ইলমে তাসাওউফের সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ নিজেদের নামের সঙ্গে ‘ফকির’ শব্দটি বিনয়বশত অধিক ব্যবহার করতেন তাই কালক্রমে এই নাম সুফি দরবেশদের সমার্থক শব্দে পরিণত হয়ে গিয়েছে। ইবনে বতুতার সফরনামার বৃত্তান্ত থেকে জানা যায়, সুলতান ফখরুদ্দীন মুবারক শাহর দরবারে ফকিরদের বিশেষ সম্মান ছিল।

সপ্তদশ-অষ্টাদশ শতাব্দীতে আরাকান রাজ্যেও ফকিরদের প্রভাব বিস্তৃত ছিল। তাদেরকে রাজন্যেবর্গের কাতারভুক্ত মনে করা হতো। কাজি, মুফতি, উলামা ও ফকির দরবেশগণ সমমর্যাদার অধিকারী ছিলেন। এতে তখনকার মুসলিম সমাজে ফকিরদের প্রভাব-প্রতিপত্তির কথা স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। ফকির আন্দোলন শুধু গরিব, নাঙ্গা, ভুখা ও ভ্রাম্যমাণ অসহায়দের আন্দোলন নয় বরং এ আন্দোলনের ভিত্তিমূলে ছিল এদেশের সর্বস্তরের সুফি-সাধকদের অকুণ্ঠ সমর্থন এবং সক্রিয় ভূমিকা।

শায়খ মজনু শাহ বুরহানা ছিলেন এ আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা। ১৭৬০ ঈসায়িতে বর্ধমান জেলায় এবং ১৭৬৩ ঈসায়িতে বাকেরগঞ্জ ও ঢাকায় ইংরেজ কুঠি আক্রমণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তাঁর সশস্ত্র বিদ্রোহ। ১৭৬০ থেকে ১৮০০ সাল পর্যন্ত সুদীর্ঘ চল্লিশ বছরব্যাপী অবিভক্ত বাংলার নানা স্থানে এই বিদ্রোহের আগুন জ্বলতে থাকে। বিশেষ করে ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর বগুড়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, মালদহে ফকির সন্ন্যাসীদের বিদ্রোহ দ্রুত বেগবান হয়ে ওঠে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, ব্রিটিশ শাসন, শোষণ, বঞ্চনা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে পরাধীনতার শিকল ভাঙ্গার দুর্বার ও অপ্রতিরোধ্য জিহাদে পরিণত হয় বাংলার জনপদ।

এই আন্দোলনে মূল নেতৃত্ব প্রদান করেছিলেন ফকির মজনু শাহ বুরহানা। তাঁর সহযোগী হিসাবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মুসা শাহ, চেরাগ আলি শাহ, সোবহান শাহ, করিম শাহ, মাদার বক্স, নুরু মোহাম্মাদ প্রমুখ। পরবর্তীকালে এই আন্দোলন ভারত উপমহাদেশের সর্বজনীন আন্দোলনে পরিণত হয় এবং হিন্দু সন্ন্যাসীরাও তাতে অংশ নেয়। তাদের মধ্যে ভবানী পাঠক, দেবী চৌধুরানী, কৃপাণাম, রামানন্দ ঘোসাই, পূতাশ্বর, অনুপম নারায়ণ, শ্রীনিবাস প্রমুখ ফকির-সন্ন্যাসী ও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ। তাঁর বাহিনীতে একে একে প্রায় ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) ফকির সন্ন্যাসী যোগদান করেন। বর্শা, তরবারি, বন্দুক, ত্রিশূল, গাদা বন্দুক, পিতলের বাঁটঅলা লাঠি এসবই ছিল তাঁদের প্রধান অস্ত্র।

ফকির আন্দোলনের সাফল্যগাথা
ফকির বাহিনী গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ করতো। তাদের আন্দোলনের গতি ইংরেজবাহিনীর চেয়েও দ্রুত ছিল। স্থানীয় লোকদের যেহেতু ইংরেজরা বিশ্বাস করতো না তাই তারা ইংল্যান্ড থেকে সৈন্য আমদানি করে ফকির বাহিনীর মোকাবেলা করত। কিন্তু দ্রুত গতিসম্পন্ন অত্যন্ত কৌশলী ফকির বাহিনীর নাগাল তারা খুব কমই পেতো। কারণ বিপ্লবীরা ছিল অনেক বেশি সুশৃঙ্খল ও সাহসী। এসব কারণে এদেরকে ধরা ততটা সহজসাধ্য ছিল না, বিধায় ইংরেজ সামরিক কর্মকর্তাগণ একপ্রকার হতাশ হয়ে পড়ে।

একটি ঐতিহাসিক পত্র
ফকির আন্দোলনের প্রভাবে ইংরেজ বেনিয়া গোষ্ঠী কতটা নাজেহাল হয়ে পড়েছিল তার প্রমাণ গ্লাডউইনের লেখা তাৎপর্যপূর্ণ একটি পত্রাংশের বঙ্গানুবাদ এখানে উদ্ধৃত হলো-

‘ভদ্র মহোদয়গণ! আপনারা ভাবছেন আমি মজনু শাহ সম্পর্কে শুধু শুধু ভেবে সারা হচ্ছি। কিন্তু আপনারা বুঝতে পারছেন না, ব্যাপারটা সত্যি সত্যিই বড় উদ্বেগজনক। এটা যদি শুধু আমার ব্যক্তিগত নিরাপত্তার কথা হতো আমি নিশ্চয়ই সাহায্যের জন্যে কোনো আবেদন করতাম না। কিন্তু সরকার সমর্থক প্রজাগণ বড়ই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। তাই কর্তব্যবোধে সাহায্যের জন্যে আবেদন করতে বাধ্য হয়েছি। সে (ফকির মজনু শাহ) এবার শুধুমাত্র কয়েকজন বাঙালি সাথে নিয়েই আসেনি, রীতিমতো সশস্ত্র রাজপুত বাহিনীরও নায়ক হিসেবে এসেছে। সে এখানে একটি সেনানিবাসও গড়ে তুলতে শুরু করেছে এবং প্রকাশ্যেই ঘোষণা করেছে যে, এবার সারা বর্ষাকাল এখানে থাকবে। সে জন্যে খাদ্যসামগ্রীও সংগ্রহ করছে। দিনাজপুর থেকে তাঁর বিরুদ্ধে একদল সেনাবাহিনী পাঠানো হচ্ছে শুনে সে অনেক কষ্টে করতোয়া পাড়ি দিয়ে ব্রহ্মপুত্রের দিকে চলে গিয়েছে। পথে কোথাও বিশ্রাম পর্যন্ত নেয়নি।

তার আসার দুই বা তিন দিন পরে তাঁর কাছে একজন কাজি পাঠিয়ে তাঁর আভিপ্রায় জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সে সাফ জানিয়েছে, এখানে তাঁর কিছু দেনা-পাওনা আছে। শান্তিতে মহাস্থান গড়ে থাকতে দিলে সে সেগুলি আদায় করে নিয়ে যাবে। আর যদি বাধা দেওয়া হয়, সে ভয় পায় না। বরং মোকাবেলার জন্যে সে প্রস্তুত।’

ইতিহাসের চালবাজি
ফকির আন্দোলন যেহেতু ইংরেজদের বিরুদ্ধে ছিল তাই তৎকালীন ইংরেজ ঐতিহাসিকগণ তাঁর আন্দোলনের নামে নানা রকম উদ্ভট ও বানোয়াট কথা ছড়িয়ে ইতিহাসকে কলুষিত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু ইতিহাসের সত্যতা বিচারে তা পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ পেয়েছে। সচেতন মুসলিম ঐতিহাসিকগণ তা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে উল্লেখ করেছেন।

প্রভাব প্রতিপত্তি
ফকির নেতা মজনু শাহ বুরহানা রহমাতুল্লাহি আলায়হির প্রভাব প্রতিপত্তি সম্পর্কে বলতে গেলে ১৭৭২ ঈসায়ির ২৬ জানুয়ারির একটি সরকারি পত্রের কথা উল্লেখ করতে হয়। তিনি বলেন, ‘মজনু ফকির দলের সাথে দুটি উট, প্রায় ৪০টি হাউই, ৪০০টি গাদা বন্দুক ও কয়েকটি ঘূর্ণায়মান কামানসহ সর্বমোট প্রায় ১০০০ (এক হাজার) সশস্ত্র লোক রয়েছে। মজনু নিজেই একটি খুব ভালো ঘোড়ায় আরোহণ করে যাতায়ত করে। তাঁর শিষ্যদেরও কয়েকজনের টাট্টু ঘোড়া।

জীবনাবসান
১৭৮৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর সৈন্যসহ বগুড়া জেলা থেকে পূর্বদিকে যাত্রা করার পথে কালেশ্বর নামক স্থানে মজনু শাহ ইংরেজ বাহিনীর সম্মুখীন হন। এই যুদ্ধে মজনু শাহ মারাত্মকভাবে আহত হন। এই আঘাতের যন্ত্রণা থেকে তিনি আর মুক্তি পাননি। ১৭৮৭ সালের জানুয়ারি মাসে বিহারের মাখনপুর গ্রামের এক গোপন ডেরাতে সন্ন্যাসী বিদ্রোহের এই নায়কের কর্মময় জীবনের অবসান ঘটে।

ফকির মজনু শাহ মৃত্যুবরণ করার পর মুসা শাহ, চেরাগ আলি শাহ, সোবহান শাহ, মাদার বক্স, করিম শাহ প্রমুখ ফকির নেতা প্রাণপণ চেষ্টা করেও ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধে জয়ী হতে পারেননি। যে কারণে ফকির আন্দোলন ক্রমেই ঝিমিয়ে পড়ে। ফকির মজনু শাহ বুরহানা রহমাতুল্লাহি আলায়হি এই সশস্ত্র বিদ্রোহ বাংলার জমিনে বিদেশি শোষকশক্তিকে উৎখাত করতে না পারলেও তাদের সন্ত্রস্ত করে রেখেছে, পথ দেখিয়েছে পরবর্তী ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের মুক্তিকামী মানুষদের।