দুঃখনদী, সাঁতার-জানা লোকের দিকে বও
জন্মাব্দি পাঠশালাতে রোজ শিখেছি 
দৌড়ে যাওয়া, উঁচুয় উঠা, উড়তে শেখার মন্ত্র বিকট
পানকৌড়ির ডুবসাঁতারী বিদ্যা জানা নাই
দুঃখনদী, অন্যকোনো গহীন বুকে
ঢেউয়ের ঘায়ে পাঁজর ভেঙে দাও

এই বুকেতে পাবে কেবল অযত্ন আর অবহেলা
আদর করে কেউ কবে না—পাগলা নদী,
এমন করে খলবলিয়ে হাসে বুঝি!

সন্ধেবেলা নাওয়ের ছইয়ে বসবে না কেউ বাঁশী হাতে
শিখিনি আমি ভাটিয়ালি, কাজলরেখা, হাছন রাজা
আমার কাছে আছে অনেক সুখমন্ত্র, পাথরচাপা, অরুন্ধতী 

দুঃখ আমায় মানায় না আর, চোখের নিচে ছাপ থেকে যায় কালো
দুঃখনদী, অববাহিকা সঙ্গে করে একা একা চুপ গোপনে
অন্যকারো চোখ ভিজিয়ে দাও

অশিক্ষিত মূর্খ আকাট—হয়নি পড়া দুঃখাবহ টোটকা-কিতাব
যা শিখেছি বিদ্যা-পুরাণ, সকল কেবল সুখের তাবিজ 
উন্নয়নের তীব্র জোয়ার, সফলতা, অর্থকরী জীবনযাপন

দুঃখনদী, যে বুকেতে বৃক্ষ আছে ভালোবাসার
সকাল-দুপুর উপচে পড়ে অবুঝ প্রেমের জলের ধারা
সেই বুকে যাও বোকা নদী
সেই বুকেতে খুব জরুরি দুঃখপ্রবণ জোয়ার-ভাটা