আমি খুব ভোরে তোমার কাছে যেতে চাই
যখন এক-দুটো ডাহুক কেবল কুউ কুউ করে জাগবে
ডিঙি থামিয়ে পুনর্ভবা নদীতে অজু করবে জেলে ফরিদ
সুনিতা চমকানো মনে স্বামীর বুকে হাত রেখে বলবে—
সাত-সকালে মসজিদের মাইকে কার মরার খবর কয়?

আমি এমন ভোরে তোমার কাছে যেতে চাই
যখন বৃষ্টির শেষ ফোঁটাগুলো যাবে সাপ্তাহিক ছুটিতে
দরজার চৌকাঠে লেগে থাকবে খানিকটা রাতজাগা হাওয়া
ইটভাটার চিমনিতে গুচ্ছ গুচ্ছ সাদা ধোঁয়া
পাক খেয়ে মিলিয়ে যাবে মহাশূন্যের ও-জোন ভেদ করে
বৃদ্ধ মতি মাস্টার কাশতে কাশতে উঠে বসবে বারান্দায়
মতিহার রেলস্টেশনে কেউ বসে থাকবে না লেটনাইট ট্রেনের অপেক্ষায় 
কেবল তুমি আমার আগমন-প্রতীক্ষায় বিনিদ্র নির্ঘুম
লা তা’খুযুহু সিনাতুওঁ অলা নাউম

আমি সেই ভোরে তোমার কাছে যেতে চাই
যে ভোরে আল-হামদুলিল্লাহিল্লাযি আহয়্যানা বা’দা মা আমাতানা ওয়া ইলায়হিন নুশুর বলার পর
আমি জেগে উঠতে চেয়েছিলাম এই প্রার্থনায়—
কোনো পিতার কাঁধে আর উঠবে না সন্তানের লাশের খাট
তরুণীর শরীর ঝলসে যাবে না নপুংসকের লোলুপ আগুনে
বোমা নয়, গুলি নয়—মানুষ মানুষের দিকে ছুড়ে মারবে
থোকা থোকা সাদা-গোলাপী শিউলী আর টিউলিপ

আমি খুব ভোরে তোমার কাছে যেতে চাই
যখন আমার প্রেমিকারা তাহাজ্জুদে বেহেশতলাভের আশায় 
মিনতি-কান্নায় ভেজাবে সবুজ জায়নামাজ
দূরপাল্লার ট্রাকগুলো পেঁয়াজ বোঝাই করে চলে যাবে নগরের দিকে
কিছু বেগুনী মেঘ ঢেকে দেবে বৈশাখের দশমী চাঁদ
দূরে কোনো বাউলের আঙুলে বেজে উঠবে অলৌকিক দোতারা
ঠিক তখন—তোমাকে দেখার অদম্য লিপ্সায় 
আমার ঘুমন্ত পাপিষ্ঠ চোখ আচমকা যাবে খুলে—

কোথায় তুমি? কোথায় তুমি প্রিয়ন্তী আলিফলামমিম?
অ-ইযা ছাআলাকা ই’বাদি—আ’ন্নি, ফা-ইন্নি করিব

———————————————
সুফিয়ানা : জার্নি টু ইনফিনিটি