vice.com-এ ইসলামের সেক্স এডুকেশন বিষয়ে একটা আর্টিকেল পড়লাম। এই আর্টিকেল পশ্চিমের কাছে হয়তো খুবই আশ্চর্যবোধক বা সুড়সুড়ি জাগানিয়া, কিন্তু প্রাচ্যের সমাজে এখানকার কথা তো সবই ডালভাত।

হুজুররা মহফিলে শত শত বছর ধইরা এগুলা বলতেছে।

পশ্চিমের বড় সমস্যা হলো তাদের বস্তুবাদ। সেক্স জিনিসটা তো তাদের কাছে একটা বিরাট বস্তু, জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ কারণে তারা সেক্সের নানা অ্যাঙ্গেল বানাইছে। ফাক করার আগে কতভাবে এবং কত উত্তম পদ্ধতিতে ফোরপ্লে করা হবে না হবে, ফকের সময় উপরে না ডানে-বামে, চিত না কাত, 69 নাকি মিশনারি… এমন হাজার হাজার গবেষণা তারা করতেছে। কারণ তাদের কাছে বস্তুগত সেক্সটাই মুখ্য। এ কারণে এটাকে যতভাবে পারা যায় আরও উপভোগ্য বানাইতেছে তারা।

কিন্তু মুসলিম সমাজে সেক্স একটা প্রয়োজনীয় ভোগ্য আচরণ এবং ইবাদতও। এটাকে স্রেফ বিনোদনের মাধ্যম নির্ধারণ করা হয় নাই, মানবিক প্রয়োজন বলা হইছে। এ কারণে এটা নিয়ে ফ্যান্টাসি মুসলিমদের না হইলেও চলে।

এই যে পশ্চিমে নানা প্রকার অত্যুক্ত সেক্স নিয়া জোরশোর চলতেছে, যেমন গে, লেসবিয়ান, ট্রান্সজেন্ডার বায়োসেক্সুয়ালিটি; এবং সেইটাকে তারা স্বাভাবিক যৌনক্রিয়া এবং কোথাও কোথাও মহান এক্টিভিটি বইলা ভ্রম করতেছে, এগুলা হওয়ার মূল কারণটা বুঝতে পারছো?

কারণটা হলো, যখন তুমি উপভোগের উদ্দেশ্যে ফ্রাইড রাইস খাইতে রেস্টুরেন্টে যাইবা, দেখবা, একেক রেস্টুরেন্টের ফ্রাইড রাইস একেক রকম। প্রত্যেকটার স্বাদ আলাদা, ফ্লেভার আলাদা। গ্রিলড চিকেন খাইতে যাও, একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হইবা-নানান প্রকার তাদের স্বাদ। কারণ, এই জিনিসগুলা তুমি খাইতে যাইতেছো উপভোগের উদ্দেশে। রেস্টুরেন্টওয়ালারা তাদের মর্জিমাফিক তোমারে উপভোগ্য খাবার দিতে এমন নানা মজারু জিনিস মাখাইছে ওই খাবারে, যাতে ওইটা আরও উপভোগ্য হয়।

কিন্তু তুমি ভাত খাইতে যাও, বাড়ি থিকা নিয়া রেস্টুরেন্ট বা কাঙালি ভোজ, সবখানে ভাতের স্বাদ উনিশ-বিশ প্রায় একই। কারণ, ভাতটা হইলো তোমার প্রয়োজনীয় খাবার, তোমার পেটের আবশ্যিক অন্ন, তোমার শরীরের ক্যালরির যোগানদাতা। এ কারণে এটার স্বাদের হেরফের তোমার দরকার নাই, পেট পুরা হইছে আসল কথা।

এইবার সেক্স বিষয়টারে এটার সঙ্গে মিশাও। পশ্চিমা সভ্যতার কাছে সেক্স বিষয়টা এতই সুস্বাদ যে, তারা এটাকে নানাভাবে এক্সপেরিমেন্ট করতেছে। যার অঢেল চিকেন বা ফ্রাইড রাইস উপভোগ করার সুযোগ আছে সে প্রতিদিন একেক রেস্টুরেন্টে গিয়ে সেটা উপভোগ করবে। যখন সকল ফ্রাইড রাইস চাখা শেষ হয়া যায় তখন সে মনে করে, চিকেনের সবই তো খাইলাম, আর ভালো লাগে না এই চিকেন। এইবার চিকেনের নাড়িভুড়ি খাইয়া দেখি, আমরা যেটারে মুরগির ‘আতুড়ি’ বলে থাকি আরকি। তো, এইবার সে মুরগির কুচ্ছিত আতুড়ি খাওয়ায় ব্রতী হইলো। কারণ এটার স্বাদ নতুন, এক্সপেরিমেন্ট নতুন। এই করতে করতে বিরাট একদল লোক নানা প্রকার সেক্সুয়ালিটিতে জড়ায়া যাইতেছে। সেটা দেইখা আরও লোকজন ইন্সপায়ার্ড হইতেছে। হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ, একজন সেলিব্রেটিকে কোটি কোটি মানুষ ফলো করে। তার প্রতিটি কাজকে সে নিজের ভালালাগা দিয়া বিচার করে। সুতরাং এমন একজন সেলিব্রেটি যদি গে বা লেসবিয়ান হয়, বা এসবকে সমর্থন করে তখন সেও এসবের প্রতি অনুরক্ত হয়ে যায় বা মৌন সমর্থন করতে থাকে।

তই, আর্টিকেলের যে বয়ানটা ওই মহিলারে কেন্দ্র কইরা বলা হইছে, তাতে পশ্চিমাদের একটা মজারু আছে। মজারুটা হইলো, তারা তাদের সঙ্গে সঙ্গে প্রফেট মুহাম্মদ সা.-কেও উত্তরাধুনিক বানাইতে কোশেশ করতেছে। ভাবটা এমন, ‘আচ্ছা, আরবের সেই বেদুইন লোকটা তাহলে সেক্সুয়াল ব্যাপারে এমন আধুনিক ধারণা রাখতেন! ওয়াহ!!’

এইটা হইতেছে তাদের আত্মতৃপ্তির জায়গা। তারা প্রফেটকে আধুনিক করতে পারতেছে, এমন চিন্তা আর কি। অথচ তারা জানে না, মুসলিমসমাজে সেক্সুয়াল ভব্যতা চৌদ্দশ বছর ধইরা বিশ্বকে গাইড করতেছে। পৃথিবীর সমস্ত মানুষের জন্য ইসলামের সুসভ্য এবং বিজ্ঞানসম্মত সেক্সুয়াল গাইডেন্স অবশ্যমান্য হতে পারে, যদি তারা সেটা গ্রহণ করতে চায়। আর না চাইলে কার কি বলার আছে।

তাম্মাত বিল খায়ের