আমি একবার আমার প্রেমিকাকে মিনতি করে বললাম—
তুমি যখন কাঁদবে, আমাকে ডেকে নিও
পৃথিবীতে নারীর কান্নার মতো ভয়ঙ্কর সুন্দর কিছু নেই আর
তুমি কাঁদবে আর আমি একজন নওমুসলিমের মতো অবাক হয়ে দেখবো
তোমার গাল বেয়ে নেমে আসছে ঈশ্বরস্পর্শী সালসাবিল ঝর্ণাধারা
মরু-তৃষিতের মতো বুভুক্ষা আমি শুষে নেবো প্রতি ফোঁটা বিন্দুজল
কাউসার সরোবরে স্নানশেষে বুকের মধ্যে ধারণ করবো
তোমার সকল শোকতাপ, বেদনার অর্ঘ্য, হতাশ্বাসের বিরহী বিলাপ
তিনদিন পর সে আমাকে পাঠালো একটা কাঁচের শিশি
লেবেলে লেখা— নে তোর চোখের পানি
খেয়ে খেয়ে কবিতা লেখ আর আমার জিকির কর, নপুংসক কোথাকার!
এর পর থেকে প্রতিদিন আমি তার অশ্রুর শব্দ শুনতে পাই
একবার আমি প্রিয়তমার পায়ের দিকে তাকিয়ে বললাম—
যখন তুমি হেঁটে যাবে হাবিয়া দোজখে
তোমার ফর্সা দীঘল পায়ের নিচে পেতে দেবো বুক
এক জীবনে তোমার জন্য পুঁজি রাখা মাইলকে মাইল ভালোবাসা দিয়ে
তৈরি করবো সবুজ গুল্মলতা, উদ্বাহু শক্ত শেকড়
তোমার মখমল পা জড়িয়ে ধরে তারা চিৎকার করে বলতে থাকবে—
যেও না, জান্নাতিন তাজরি মিন তাহতিহাল আনহার
এই বুকের তলদেশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে অন্তঃসলীলা প্রেমের
পরদিন জামে মসজিদের সামনে আমার বিচার হলো—
পর্দানশিন একজন সম্ভ্রান্ত মুসলিম রমণীকে দোজখে নেয়ার অপরাধে
লোকজন আমার পিঠে গাট্টি বেঁধে পাঠিয়ে দিলো তিন চিল্লায়
এর পর থেকে মসজিদে মসজিদে আমি তার পায়ের শব্দ শুনি
একদিন আমার প্রিয়াঞ্জনা দূরালাপনে নখরা করে বললো—
তুমি যদিও আমার থেকে দূরে থাকো
তবু থাকো আমার চোখের তারায়, বুকের জামায়, নিঃশ্বাস সমান দূরে
আমি হাঁটি তোমার ছায়ার সঙ্গে, কল্পনায় তোমার বুকে মাথা রাখি
রব্বানার মতো আমিও থাকি তোমার শাহরগের কাছাকাছি
মাঝেমাঝে মনে হয়, বাস্তবের তুমির চেয়ে কল্পনার তুমি অধিক প্রিয়
তৎক্ষণাৎ আমি তাকে একটা বার্তা পাঠালাম—
ফাক ইউরসেল্ফ
বাংলা তর্জমা পাঠালাম— তুই মরিস না কেন?
এর পর থেকে আমার জানাজার অপেক্ষায় কাটছে তার বৈধব্যজীবন
ইয়া আফরোজা ইয়া আফরোজা কাব্যগ্রন্থ থেকে