এই ধরনের সস্তা কথাগুলো মেয়েদের জন্য অপমানজনক।

আমাদের পুরুষমন এই টাইপের বাণী-টানী ডেলিভারি দিতে তৃপ্তি বোধ করে। অবিবাহিত বালকরা ফেসবুক—সোস্যাল মিডিয়ায় এগুলো পোস্ট করে আরও বেশি তৃপ্তি পায়। তারা কেন রাজা-রানি-গোলামের ঘর নিয়ে এত চিন্তিত—এটা নিয়ে গবেষণা হওয়া দরকার।
দ্বিতীয় কথা হলো, স্বামীকে গোলাম বা রাজা বানানোর দায়িত্ব স্ত্রীর না। এটা দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়ার বিষয়। বস্তুত, ঘরে ঘরে আমরা পুরুষরা ঠিকই নিজেকে রাজা জ্ঞান করি, কিন্তু কাজের বেলায় ঘরের নারীকে রাজরানির সম্মান দিতে মোটেও প্রস্তুত না। এসব বাণী অমৃত কেবলই ফেসবুকের চটকদারিতে চলে, ঘরে না।
তৃতীয় কথা হলো, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক মুনিব-গোলামের না, রাজা-রানিরও না। রাজা মাত্রই শাসক, পদাধিকার বলে শাসন করা তার একচ্ছত্র অধিকার। কিন্তু রানি মাত্রই মহলের অন্তপুরবাসিনী। রাজার মনোরঞ্জন আর মহলের শোভাবর্ধন ছাড়া তার কোনো কাজ থাকে না।
তাছাড়া, রাজার বর্তমানে রানি তো শাসনের দণ্ডমুণ্ডের কর্তৃত্বও পেতে পারে না। কিন্তু সংসারে স্বামী-স্ত্রীর পদাধিকার সমান্তরাল। দুজনেরই শাসনের অধিকার রয়েছে। রাজ্যের কোন কোন অঞ্চল কে শাসন করবে—এগুলো পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে। কোন কোন অঞ্চলে দুজনই দ্বৈত শাসন করবে—এগুলোও সংলাপের মাধ্যমে ঠিক করে নেবে।
সংসার রাজা-রানির জিনিস না। রাজা-রানিকে সংসার করতে হয় না। সংসার আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের বিষয়। স্বামী-স্ত্রী একজন আরেকজনকে যত বেশি বুঝবে তত বেশি এ বন্ধন দৃঢ় হবে।

এ ধরনের সস্তা ও অপমানজনক বাণী ডেলিভারি দিয়ে সংসারে শান্তি আনা যায় না।


Leave a Reply

Your email address will not be published.