আমার পায়ের দিকে তাকিয়ে দেখো
যোগিনী, তোমার জন্য অশ্বত্থ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি
অসংখ্য ঝড়ের অপমান স’য়ে ছড়িয়ে আছি উদ্বাহু দুই হাত
সমস্ত পাতারা ডাকছে তোমার পবিত্র জপনাম
বৃক্ষেরা ক্রন্দন করতে করতে শুকিয়ে ফেলেছে মাটির উর্বরতা
চারাগাছের বদলে প্রতি মুহূর্তে জন্ম নিচ্ছে কেবল ষড়পদী বিষপিঁপড়ে
মাটির গভীর থেকে দুর্লঙ্ঘ্য সকল বীজ, শস্য, ফসলের শীষ
মাটি ফুঁড়ে উঠে আর চেয়ে দেখে
পৃথিবীতে একটাও সূর্য উঠছে না আর
এক ফোঁটা বৃষ্টি বিলোচ্ছে না মহৎ আকাশ
সকল ঘাস হয়ে যাচ্ছে মরু-বালিয়াড়ি
সকল ফড়িং নদী, পুকুর, হাওড়ে ডুবে ডুবে করছে আত্মহত্য
মিছিলের সামনে শ্লোগানরত নারীরা রাত্রিবেলা জলসাঘরে বাঈজি হয়ে যাচ্ছে
আমার চোখ এখন এমন হয়ে গেছে
আমার চোখ থেকে সরে যাচ্ছে যাবতীয় বৃক্ষ তরুলতা
আমার চোখের বারান্দা থেকে ক্ষয়ে যাচ্ছে মাটির ঘ্রাণ
হাতে পাচ্ছি না আর নরোম রোদের উত্তাপ
পাখিরা আমার নাম ভুলে গেছে, আমি তাদেরও
আমি নদী ভেবে ঝাঁপ দিয়ে গিলছি খা খা মরু কালাহারি
বৃষ্টি এলে গালি দেই বাতাস এবং নিজেকে অনশন ভেবে হাঁটতে থাকি নিরুদ্দেশ
শহরের প্রতিটি ল্যাম্পপোস্টে বিদ্যুতের বদলে
একশো চল্লিশ ভোল্ট গতিতে ভেসে যাচ্ছে তোমার হাতের স্পর্শ, শরীরের গোলাপ
আমি রাস্তার প্রতিটি সোডিয়াম বাতির নিচে গিয়ে দাঁড়াই আর
তুমি এসে গলে গলে পড়ো আমার চুলে, নাকে, গালে, চিবুকে আমার অস্তিত্বে
শীতের কুয়াশার মতো ঝিম হয়ে, রাত্রির অন্ধকারের মতো
এক গুচ্ছ আচমকা হাসি কলরোলের মতো
হলুদ আলো আমার বুকে খঞ্জরের মতো বিদ্ধ হয়
আর তখন প্রতিটি আলোকরশ্মি হয়ে যায় হীরক আলো
প্রতিটি বৃক্ষ-পাতা-বৃষ্টির ফোঁটা-জলসাঘর একেকটি হত্যাকারী