উপনিবেশকালীন সময়ে ব্রিটিশ প্রণীত শিক্ষাধারা এবং শিক্ষা কারিকুলাম যতদিন এ দেশে থাকবে, ততদিন এ দেশে টেকসই কোনো উন্নয়ন সম্ভব নয়। কারণ, এই শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়ন করা হয়েছিল একদল শিক্ষিত চাকর তৈরি করার জন্য, যারা শিক্ষিত হয়ে ব্রিটিশদের বশংবদ হিসেবে লেজ নাড়বে। এটা ছিল খাঁটি চাকর তৈরির কারিকুলাম।

ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়েছে ৭০ বছর, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ৫০-এর দোরগোড়ায়। অথচ আজ পর্যন্ত আমাদের মন থেকে চাকর মনোবৃত্তি দূর হয়নি। কারণ, যুগ যুগ ধরে আমরা আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্রিটিশদের সেই চাকরিগিরির সবকই শিখিয়ে যাচ্ছি। ফলে, শিক্ষার প্রসার ঘটছে ঠিকই কিন্তু সে শিক্ষা সামগ্রিক উন্নয়নে কোনো কাজে লাগছে না।

আমাদের দেশে স্বাক্ষরতার হার কম, কিন্তু এ দেশে শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা কি কম? দেশের আয়তন অনুপাতে শিক্ষিত মানুষের কমতি নেই, কমতি আমাদের মানসিকতায়। 

উন্নয়নমুখী পড়াশোনা, বিজ্ঞানভিত্তিক জ্ঞানের বিকাশ, উদ্ভাবনী শিক্ষায় প্রণোদনা, সৃজনশীল সিলেবাস, দক্ষতা অর্জনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব—এসব বিষয়ে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তেমন কোনো আগ্রহই লক্ষ করা যায় না। তাদের সকল আগ্রহ চাকরির জন্য উন্নতমানের চাকর তৈরিতে। ব্রিটিশের ভুত আজও আমাদের তাড়া করে ফিরছে। 

আমাদের উচিত, আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা সম্পূর্ণ নতুন করে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিলেবাস প্রণয়ন করা।