Data Colonialism (ডাটা কলোনিয়ালিজম) কি হতে যাচ্ছে আগামী পৃথিবীর নতুন হুমকি? এমন শংকা করছেন খোদ বড় বড় প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরাই।

Data Colonialism-এর সহজ বাংলা বলা যায় ‘তথ্য উপনিবেশবাদ’। অর্থাৎ, তথ্যের মাধ্যমে যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি বা কোনো দেশের ওপরও জবরদখল প্রতিষ্ঠা করে থাকে। 

খুব ছোট্ট করে বিষয়টা বলি। ধরেন, আজ থেকে আড়াই শ বছর আগে ব্রিটিশরা আমাদের হিন্দুস্তান দখল করে তাদের উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করে। কীভাবে প্রতিষ্ঠা করেছিল? কারণ, তাদের আধুনিক সমরাস্ত্র ছিল, মাথায় কূটবুদ্ধি ছিল, সেই সমরাস্ত্র ও কূটবুদ্ধির জোরে তারা পুরো ভারতবর্ষ দু শ বছর শাসন করে। এটা ছিল ব্রিটিশ উপনিবেশ।

বর্তমান সময়ে গুগল বা ফেসবুক যদি চায় পৃথিবীর যে কোনো একটা দেশ দখল করবে, বা একটা দেশের সঙ্গে আরেকটা দেশের যুদ্ধ বাঁধাবে, তবে সেটা করা তাদের পক্ষে খুবই সম্ভব ও সাধারণ কাজ। কীভাবে? শুধু তথ্য ব্যবহারের মাধ্যমে। কোনো সমরাস্ত্র, যুদ্ধবিমান, সেনাবাহিনীর প্রয়োজন নেই, কেবল গুগলের কাছে গত ২০ বছর ধরে সংরক্ষিত তথ্যের মাধ্যমে এমন আকাম তারা করতে পারে। 

রাষ্ট্রের সকল ব্যাংক চলে ইন্টারনেটভিত্তিক অ্যালগারিদমে, হাজারও সরকারি অফিসের সেবা চলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে, রাষ্ট্রের গোপন নথি জমা হয় ক্লাউড ড্রাইভে, মোবাইল ফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের ভয়েস রেকর্ড, হাজার হাজার কোম্পানি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তথ্য…মোটকথা সকল প্রতিষ্ঠানই অনলাইনভিত্তিক এবং প্রতিদিন তারা কোটি কোটি মানুষের মিলিয়ন মিলিয়ন ডাটা বা তথ্য ইন্টারনেটে জমা করছে। এসব তথ্য কোনো মানুষ নিয়ন্ত্রণ করে না, নিয়ন্ত্রণ করে অ্যালগারিদম, মানে সংখ্যা। বিভিন্ন সংখ্যাবাচক কোড দিয়ে বানানো সফওয়্যার নিয়ন্ত্রণ করে সারা পৃথিবীর সকল অনলাইন সেবা, অর্থাৎ পুরো ইন্টারনেট দুনিয়া।

আর এই ইন্টারনেট দুনিয়ার ডন হচ্ছে Google, Amazon, Facebook-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। পৃথিবীর সকল তথ্য তাদের সার্ভার তথা তথ্যভাণ্ডারে সংরক্ষিত। এর মাধ্যমেই তারা নিয়ন্ত্রণ করছে পুরো দুনিয়া। 

সুতরাং Data Colonialism ‘তথ্য উপনিবেশবাদ’-এর নিয়ন্ত্রিত পৃথিবীতে আপনাকে স্বাগতম।