‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’—এই ‘মহান’ বাণীর বাস্তব উদাহরণ অনেকটা এমন—
বউ যার যার, বউয়ের জরায়ু সবার!
স্যরি টু সে, বাট… মানুষের একটা সাধারণ বিচার-বুদ্ধি তো থাকা প্রয়োজন। প্রতিটা ধর্মেরই নিজস্ব কিছু উৎসব থাকে, যেগুলো একান্তই ওই ধর্মাবলম্বী লোকদের জন্য বিশেষায়িত। কুরবানির ঈদ আমার জন্য ধর্মীয় উৎসব। এই উৎসবে কি কোনো হিন্দু আমার সঙ্গে গরু কুরবানিতে অংশগ্রহণ করবে? না হলে উৎসব সবার হলো কীভাবে?
তেমনি দূর্গাপূজায় গিয়ে কোনো মুসলিম নিশ্চয় উলুধ্বনি করবে না। বৌদ্ধদের কঠিন চী-বর দানে কোনো খ্রিষ্টান গিয়ে হলুদ পোশাক পরে মাথা নোয়াবে না। তা হলে উৎসব সার্বজনীন হলো কীভাবে? ধর্মীয় মানুষের কাছে এগুলোই তো উৎসব এবং প্রতিটি ধর্মের জন্য তাদের উৎসবও আলাদা।
তবে উৎসব মানে যদি হয় বন্ধু-বান্ধবী নিয়ে পার্কে ঘোরাঘুরি করা, খাওয়া-দাওয়া, টিভিতে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানমালা, ডিজে পার্টি… তাহলে সেটা সার্বজনীন হতে পারে। আবদুল্লাহ আর নারায়ণ, গৌতম আর রাফায়েল একসঙ্গে নেচে গেয়ে ডিজে পার্টি সেলিব্রেট করলে কার কী বলার আছে!
তবে কথা হলো—দুনিয়ার কোনো ধর্মে ডিজে পার্টি আর বারবিকিউ পার্টি ধর্মীয় উৎসব কি-না সেটা যাচাই করা।
সুতরাং, বউ যার, বউয়ের জরায়ুর একচ্ছত্র অধিকারও তার। বেশ্যাদের জরায়ুই কেবল সকলের জন্য সমান হতে পারে।
দুই
মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও যারা ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলেন, নানা থিউরি কপচান; এদের অধিকাংশের ভাষাব্যবহার অতি নিম্ন মানের এবং সবসময় তারা আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে কথা বলেন।
এই মনোবৃত্তির কারণ হলো—মানসিক নিরাপত্তাহীনতা। তার যে চিন্তা এবং বোধ, এটা অনেক সময়ই মানসিকভাবে তাকে পরিপূর্ণ স্থিতি দিতে অক্ষম হয়ে পড়ে। তিনি তার এ ধরনের অক্ষমতা আড়াল করতে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন এবং এই মনোবৃত্তিই তাকে অপরকে আক্রমণ করার রসদ জোগায়।
একই কারণ ইসলামমান্য অনেক অজ্ঞ মানুষের বেলায়ও প্রযোজ্য। জ্ঞানহীন ধর্মীয় লোকজন ধর্ম সম্পর্কে নিজের অজ্ঞতা আড়াল করতে রুচিহীন ভাষা এবং ব্যক্তিআক্রমণের মতো ত্যাজ্য বিষয়ের আশ্রয় নেন।
এ দুই ধরনের মানুষই ইসলামের মূল স্পিরিটের জন্য ক্ষতিকর!
তিন
যৌবন বয়সে যেসব ছেলেমেয়ে ধর্মবিদ্বেষী হয়ে ওঠে, তাদের ৮০ থেকে ৯০ ভাগই ধর্ম কর্তৃক সেক্সুয়াল স্বাধীনতা না পাওয়ার হতাশা থেকে বিদ্বেষপ্রবণ হয়।
এ ধরনের ধর্মবিদ্বেষের আনুষঙ্গিক কিছু উপকরণ:
* হলিউড-বলিউডের সিনেমার প্রভাব
* পর্ন দেখার কুফল
* পশ্চিমাদের অবাধ যৌনতায় প্রভাবিত হওয়া
* বিয়ে করতে দেরি করা
* ক্যারিয়ার বিল্ডআপ করার পেছনে সময় নষ্ট করা
* পারিবারিক অসহিষ্ণুতা অথবা পারিবারিক কলহ
* ধর্মকে একটি শৃংখল মনে করা
চার
মিস্টার শিমুলের কথা মেনে নিয়ে ধরা যাক, কেবল যৌন ক্রিয়াকৌশলের মাধ্যমে বীর্যপাতই নর-নারীর কাছে আসার একমাত কারণ। সে কারণে পতিতাও যে তবকার, বিয়ে করা বউও একই তবকার। পার্থক্য এতটুকুই— একজনকে বীর্যস্খলন মাত্র তার পাওনা বুঝিয়ে দিতে হয়। অপরদিকে বউ নামের যে যৌনসঙ্গী, তাকে বিয়ে নামক একটা সামাজিক প্রথার মাধ্যমে সারাজীবনের জন্য ‘যৌনতার বিনিময়ে খাদ্য’ নামক শৃংখলে বন্দী করা হয়।
মিস্টার শিমুল বলছেন যে— বীর্যস্খলনই যদি কাম্য তাহলে তার জন্য অভিজ্ঞতাসম্পন্ন যৌনশিল্পীর কাছেই যাওয়া শ্রেয়। এমন ভণ্ডামিপূর্ণ সম্পর্কের নামে বিয়েপ্রথার কী প্রয়োজন?
মি. শিমুল বেশ বলেছেন!
তো মি. শিমুল, কল্পনা করি— স্বর্গীয় অ্যাডাম বীর্যস্খলনের জন্য তার মন্ত্রপূত ওয়াইফ ইভের কাছে না এসে আফ্রোদিতি বা ভেনাসের কাছে গেলো। গেলো তো গেলোই। আজ আফ্রোদিতি, কাল ভেনাস, পরশু থেমিস, জোয়ান, নাইটিংগেল, লিলিথ নামের নানা স্বর্গবেশ্যাদের ডেরায় গিয়ে স্খলনকর্ম সাধন করতে লাগলো। কিন্তু ইভের কাছে গেলো না। সুতরাং তাদের কোনো বেবিও হলো না। বেবি না হওয়ার দরুন পৃথিবীতে হাবিল, কাবিল, আকলিমা কারো আগমন হলো না। তো, পৃথিবীটা কি বিরান রয়ে গেলো না?
আরো সহজভাবে বুঝো মি. শিমুল! ধরো, (জাস্ট এক্সাম্পল) তোমার পিতাজান তোমার মতোই বিয়ে না করে নানা গণিকালয়ে রতিক্রিয়া সমাধা করে জীবনটা পার করে দিলো। তোমার মমকে শাদি না করার কারণে তখন স্বাভাবিকভাবেই তোমার জন্ম অসম্ভব। তুমি জন্ম না নিলে তোমার বংশধর হওয়ারও প্রশ্নই আসে না। এভাবে প্রতিজন পিতাজানই যদি যৌনশিল্পীর কাছে গিয়ে রতিরহণ করেন, তবে বুঝো অবস্থা! বাচ্চাহীনতায় খুব অল্প সময়ে পৃথিবী জনশূন্য হয়ে পড়বে।
তুমি হয়তো বলবে— গণিকাগণ শিশু উৎপাদন করবে। কিন্তু এই ভদ্রমহিলাগণ কার শিশু উৎপাদন করবে? যেখানে প্রতিটা পুরুষই যাচ্ছে কেবল রতিক্ষয়ের জন্য, সেখানে একটা শিশুর দায়িত্ব নিতে যাবে সে কোন আক্কলে?
মি. শিমুলের প্রথম পয়েন্টটাই ভুল। বিয়ে কেবল যৌনতাকে উপভোগ করার নাম নয়, নেভার। বিয়ে হলো পৃথিবী আবাদি রাখার একমাত্র পদ্ধতি। বিয়ে না থাকলে পৃথিবীর আবাদপ্রক্রিয়াই বন্ধ হয়ে যাবে।
তুমি হয়তো সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, ডেনমার্কের বর্তমান হকিকত সম্পর্কে বেখবর। এ দেশগুলো প্রকট শিশুহীনতায় ভুগছে। তাদের জুনিয়র স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে স্টুডেন্ট না থাকার কারণে। বন্ধু-বান্ধবীরা হরদম ফূর্তি করে, একটা পাল্টিয়ে আরেকটা, মউজ-মাস্তি… বীর্যস্খলন! সন্তান নিতে কেউই আগ্রহী হচ্ছে না।
নরওয়ের সরকারকে রীতিমতো ঘোষণা দিতে হয়েছে— সন্তান উৎপাদন করলেই নগদে ৫০ হাজার ডলার উপহার! পরবর্তীতে সন্তানের গ্র্যাজুয়েশন পর্যন্ত সকল খরচ সরকারের এবং গ্র্যাজুয়েশনের পর ভালো মাইনের চাকরির ব্যবস্থাও সরকারই করে দেবে। প্লিজ একটা বাচ্চা নেন!
এই কুপাত্রে বীর্যপাতের ফলাফলের নির্জীবতায় এসব দেশ এশিয়া-আফ্রিকা থেকে প্রচুর পরিমাণে লোকজন মাইগ্রেট করছে। ভিসা দিয়ে বলছে— কাজ করো, খাও-দাও আর ইচ্ছামতো জন্মদান প্রক্রিয়া জারি রাখো। থাইমো না!
বিয়ে কেবল যৌনতার হাতিয়ার নয়। বিয়ে মানে হচ্ছে পরিবার, ফ্যামিলি… দ্য আল্টিমেট সোর্স অব লাইফ অন আর্থ এন্ড আফটার আর্থ।