রাইত প্রায় বারোটা বাইজা গেছে। ভয়ে ভয়ে এক রিক্সাওয়ালাকে বললাম, ‘ভাই, যাত্রাবাড়ী যাইবেন?‘

রিক্সাওয়ালা ভাবলেশহীন কণ্ঠে বলল, ‘মিআতু তাকাহ্। লাইছা আক্বল্লা মিন যালিক ওয়া লাইছা আকসার!‘

আমি তার ‘ফসিহ‘ আরবি জুবান শুইনা টাশকি খাইয়া আরেক রিক্সাওয়ালাকে বললাম, ‘ভাই, আপনে যাবেন?‘

সে দাঁত খিলাল করতে করতে ছান্দসিক গলায় বলল—

আনা গানিয়্যুন

তায়্যারু লাজিজুন

তাহার মুখ থেকে মেশকে আম্বরের ঘ্রাণ বাইর হইতে লাগল। আমি হাত দিয়া মুখচাপা দিলাম।

আমি তাহাদিগের এমন পুনপৌনিক আরবি বাতচিত শুইনা পাশে থাকা এক শরবত সওদাগরকে জিগাইলাম, ‘ভ্রাতঃ, ঘটনা কী? এরা সবাই ফটাফট আরবি মারাইতেছে কেন?‘

সে শরবতে থরথরা ইসবগুল মিশাইতে মিশাইতে বলল, ‘তারা তো বেহেশতে আছে, বেহেশতে আরবি ছাড়া কথা বলা যায় না। মালেক দারোয়ানের নিষেধ আছে।‘

তখন বিষয়টা মাথায় ধরল। কৌতূহল নিয়ে শরবত সওদাগরকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তা আপনারও তো বেহেশতি ল্যাংগুয়েজে কথা বলার কথা। কিন্তু আপনে তো ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো‘ বাংলাভাষায় টকিং করতেছেন। দুনিয়ায় থাকতে মাদরাসাতুল মদীনা থিকা আরবি IELTS কইরা আসেন নাই?‘

শরবত সওদাগর কিছুক্ষণ একদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকায়া থাইকা পুকুর-শান্ত কণ্ঠে বলল, ‘চক্ষের সামনে থিকা যান ইয়া আখিউল মুকাররম! ডোন্ট রুইন মেরা পিনিক!‘

এতক্ষণে বুঝলাম। শালারা গাঞ্জা খায়া বেহেশতে ঘোরাঘুরি করতেছে! কিসের মেশকে আম্বর, সবজি পাতার গন্ধে টেকা দায়!!