মিছবাহ : ‘হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল’ বইটা আমি সবসময় পাশে রাখি। আমার কাছে যখনই খারাপ লাগে, বা যখনই আমি দুঃখিত হই, তখনই বইটা পড়ি। একটু সস্তি পাই, মনটা ভালো হয়ে যায়।

আমি : ভালোবাসা রাখবেন। ‘হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল’—এটার দ্বিতীয় কিস্তি লেখার এরাদা করছি। অনেক দূর এগিয়েও গেছি।

মিছবাহ : ওয়াও আলহামদুলিল্লাহ, খুবই খুশি হলাম। আমি মনে করি আপনার হৃদয়ের কথাগুলোই একটা ছেলের জীবনপঞ্জি। আল্লাহ আপনাকে নেক হায়াত দান করুক।

আমি : এ বই নিয়ে যখনই কোনো কিশোর তরুণ তার ভাবাবেগ জানায়—সেটা আমাকে অন্যরকম ভালোলাগা দেয়! এ বইটা আমার স্বপ্ন দেখার একটা বই, যে স্বপ্ন অনেকের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলাম।

মিছবাহ : আমি তো মনে করি আমার পুরো জীবনকে এ বইটাই পরিবর্তন করেছে।

আমি : আমার মতো অভাজনের কোনো কৃতিত্ব নেই তাতে, পাঠকের হৃদয়জ ভালোবাসাই তাকে তার পথ চিনিয়েছে।

মিছবাহ : মহান মালিক শত শত কিশোর তরুণদের বুকে আপনার প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করিয়ে দিয়েছেন।

আমি : এটুকুই দৃঢ়তম সম্বল।

মিছবাহ : জানেন আমি একদিন রোজনামচায় লিখেছিলাম, আমি কি সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর সাহেবের মত হতে পারবো? প্রশ্নটা আজো বিদ্যমান, উত্তর বিহীন!

আমি : না, পারবেন না।

মিছবাহ : কেন?

আমি : আমি আগামীর তরুণদের জন্য আমার মতো হওয়ার কোনো অপশন রাখি নাই। আমি মনেপ্রাণে চাই, তারা আমাকে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে আরও উড্ডীনে সমাসীন হোক!

মিছবাহ : আমি কোনমতে আপনার মতো হতে পারলেই হবে!

আমি : এমন স্বপ্ন কেউ দেখলে মনে করব, আমার যুদ্ধ বৃথা গেছে।


ছোট এই বইটা নিয়ে আমার নিজের অন্যরকম ভালোলাগা আছে। নিজের কিছু চিন্তা, নতুন কিছু ভাবনা, অনিচ্ছুক কতেক স্বপ্ন, কিশোর-তরুণদের পাশে বসে তাদের একান্ত সুখ-দুঃখের কথা বয়ান করার একটা তীব্র তাড়না—এ বইয়ে সসংকোচে পাখনা মেলেছে। নিজের অভিজ্ঞতা আর দৃষ্টিসীমার সামনে থাকা তরুণ মানুষের নির্যাসের ফলাফল এ বই।

এ কারণে যখনই কোনো তরুণ পাঠক বইটি পড়ে তার ভালোলাগার অভিব্যক্তি প্রকাশ করে, মনে হয়, একেবারে বিফলে যায়নি স্বপ্ন দেখা। আমি না জানি, কোথাও না কোথাও বইয়ের পৃষ্ঠাগুলো কোনো এক তরুণকে আন্দোলিত করছে। কোনো কিশোর হয়তো চারপাশের চকচকে পৃথিবীর অন্তরালে পোষা একবুক কষ্ট—এ বইয়ের অক্ষরের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। ক্ষুদ্র হোক—একটা মিহি ঢেউ তো তুলছে কোথাও। এ বইয়ের সার্থকতা এতটুকুই।

পৃথিবীর মানুষ কিশোরগণের নিভৃত বেদনা পড়তে শিখুক—এই কামনা।